
সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি পরিকল্পনা
মানব অস্তিত্ব এমন এক বিস্ময়কর বাস্তবতা, যার তুলনায় গোটা মহাবিশ্বে আর কোনো নজির নেই। মানুষকে যথার্থই বলা হয় ‘সৃষ্টির সেরা’, অর্থাৎ সকল সৃষ্ট বস্তুর মধ্যে সবচেয়ে উন্নত, সর্বাধিক অর্থবহ অস্তিত্ব। এমন এক অর্থবহ সত্ত্বা নিশ্চয়ই উদ্দেশ্যহীনভাবে সৃষ্টি হতে পারে না।
মানব সৃষ্টিকর্তা মানুষকে একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনা অনুসারে সৃষ্টি করেছেন। সেই পরিকল্পনা অনুযায়ী, এই অপূর্ণ ও সীমিত পৃথিবীতে মানুষকে এক পরীক্ষার সময় অতিক্রম করতে হবে। তারপর তার কর্মফলের ভিত্তিতে সে চিরন্তন এবং পরিপূর্ণ জগতের অধিকার লাভ করবে, যার আরেক নাম জান্নাত।
বিশ্বজগতের স্রষ্টা এই পৃথিবীকে এক জোড়ার প্রথম অর্ধাংশ হিসেবে সৃষ্টি করেছেন। প্রথম অংশ হলো এই পার্থিব জগৎ, যেখানে আমরা জন্মের পর জীবন অতিবাহিত করি। দ্বিতীয় অংশ হলো পরকাল, যেখানে আমরা মৃত্যুর পর চিরকাল বসবাস করব। স্রষ্টা মানুষকে একটি চিরন্তন সত্ত্বা হিসেবে সৃষ্টি করেছেন এবং তার জীবনকে দুই পর্বে ভাগ করেছেন—জন্ম থেকে মৃত্যু পর্যন্ত সীমিত সময় এবং মৃত্যুর পর অনন্ত জীবন। মৃত্যুর পূর্ববর্তী এই সীমিত জীবনপর্ব মানুষের জন্য এক পরীক্ষা, আর মৃত্যুর পরের অনন্ত জীবন হবে তার পরীক্ষার ভিত্তিতে পুরস্কার বা শাস্তির পর্ব।
এই জগতের স্রষ্টা এভাবেই একটি বিস্তৃত পরিকল্পনা অনুযায়ী বিশ্ব ও মানব অস্তিত্বকে গড়ে তুলেছেন। এই সৃষ্টির মূল উদ্দেশ্য হলো—তাদের নির্বাচন করা, যারা জান্নাতের যোগ্য। যারা দুরাচারী, যারা মন্দ, তারা জান্নাতের জন্য উপযুক্ত নয় এবং তাই তারা সেই চিরন্তন সুখের জগতে প্রবেশ করতে পারবে না।