
অভিযোগের মানসিকতা
অভিযোগের মানসিকতা
আমি বললাম, এটাই তো আপনার পরীক্ষা—অভিযোগের কারণ থাকা সত্ত্বেও, আপনি অভিযোগবিহীন জীবনযাপন করবেন কিনা। নেতিবাচক অভিজ্ঞতার মধ্যেও ইতিবাচক মানসিকতা বজায় রাখা শিখবেন কিনা। এই দুনিয়াই সেই পরীক্ষার ময়দান, যেখানে প্রত্যেককে পরীক্ষা দিতে হয়। যে এতে সফল হবে, সেই প্রকৃত সফল। আর যে ব্যর্থ হবে, সে প্রকৃত অর্থেই ব্যর্থ। এবং এই ব্যর্থতা কেবল সাময়িক নয়, চিরস্থায়ী। তেমনি, এই সফলতাও কেবল সাময়িক নয়, বরং অনন্তকালীন।
অভিযোগ ও অকৃতজ্ঞতা
অভিযোগ কোনো তুচ্ছ বিষয় নয়। অভিযোগের সঙ্গে অকৃতজ্ঞতা জড়িত থাকে। যে হৃদয়ে অভিযোগ বাসা বাঁধে, তা কৃতজ্ঞতার অনুভূতি থেকে শূন্য হয়ে যায়।
এ ছাড়াও, অভিযোগ একধরনের নোংরার মতো—এক ফোঁটা নোংরা যেমন বিশুদ্ধ পানির এক পুরো ট্যাংককে নষ্ট করে দিতে পারে, ঠিক তেমনি, অভিযোগের সামান্য পরিমাণও মানুষের কৃতজ্ঞচিত্ততা ধ্বংস করে দিতে যথেষ্ট।
মানুষের উচিত এতটাই সংবেদনশীল হওয়া যে, সে কোনোভাবেই কৃতজ্ঞতার ক্ষয়কে সহ্য করতে না পারে।
সে অভিযোগের কথাগুলো উপেক্ষা করবে, যাতে তার কৃতজ্ঞতার মানসিকতায় কোনো ঘাটতি না আসে।
অভিযোগ থেকে মুক্ত থাকার উপায়
এই ভয়ংকর প্রবণতা থেকে বাঁচার একটিই উপায়—অভিযোগকে শুরুতেই নির্মূল করা। সামান্যতম অভিযোগকেও এতো সংকুচিত করতে হবে, যতক্ষণ না তা শূন্যে পরিণত হয়। আর কৃতজ্ঞতার সামান্যতম অনুভূতিকেও এতো বৃদ্ধি করতে হবে, যতক্ষণ না তা শতভাগে পৌঁছে যায়। এটাই একমাত্র পদ্ধতি, যার মাধ্যমে আপনি নিজেকে এমনভাবে গড়ে তুলতে পারেন যে, আপনার ভেতরে থাকবে শুধুই কৃতজ্ঞতা, আর অকৃতজ্ঞতার এক বিন্দুও আপনার মধ্যে অবশিষ্ট থাকবে না।
যারা কৃতজ্ঞতার অনুভূতিতে জীবনযাপন করে, তাদের জন্য অপেক্ষা করছে চিরস্থায়ী জান্নাত। আর যারা অকৃতজ্ঞতার মধ্যে জীবন কাটায়, তাদের জন্য রয়েছে অনন্তকালীন জাহান্নাম।
উৎস: আল-রিসালা, নভেম্বর ২০০৯